

বাংলার আলো টিভি ডেস্কঃ
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দেলনের নেতা সারজিস আলম বলেছেন, এ বাংলাদেশে আগে চাঁদাবাজী ও সিন্ডিকেট হয়েছে এখনো হচ্ছে। আপনাদের এ সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন জায়গায় যত ভাগবাটোয়ারা হতো এখন তার চেয়ে কম হয় না বেশি হয়? আপনারা যদি এগুলো বন্ধ করতে চান তাহলে আপনাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একটা কথা মনে রাখবেন এই অভ্যুত্থানের লড়াইয়ে ঐ পাচঁ-ছয় জুনে আমরা পাঁচশ জনও রাজপথে ছিলাম না কিন্তু পাঁচ আগষ্টে সারা দেশে পাঁচ কোটি মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। এভাবে ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
তিনি তার নতুন রাজনৈতিক দলের আদর্শ তুলে ধরে বলেন, আপনারা যারা আমাদের রাজনৈতিক দলে আসতে চান তারা একটি সৎ উপার্জনের মাধ্যমে জীবিকার ব্যবস্থা করুন। যারা রাজনীতি করে তারা যদি সৎভাবে উপার্জনের পথ না পায় ত্রাা দুনিীর্তি করবে। আগে যারা রাজনীতি করেছে তারা প্রথমে ১০হাজার টাকা পরে ১০ লক্ষ টাকা দূর্ণীতি করেছে । এভাবে হাত বাড়ানোর পথ বন্ধ করতে হবে।
আমাদের রাজনৈতিক দল এই ফেব্রুয়ারিতেই আসতে যাচ্ছে। আমরা আমাদের সহযোদ্ধা নাহিদ ইসলামকে আহ্বান জানিয়েছি মন্ত্রনালয়ের ক্ষমতার চেয়ার ছেড়ে আমাদের জনতার কাতারে চলে আসেন। আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক দল করছি। বিগত সময়ে এ দেশে যে রাজনৈতিক চর্চা ছিল তা আবার নতুন করে দেখতে পাচ্ছি এটি তাদের রক্তে মিশে গেছে তাই আন্দোলনকারীদেরকেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিতে হবে। যারা আন্দোলনে সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদেরকেই নেতৃত্বে থাকতে হবে না হলে পেছনের সারির সুবিধাবাজ অযোগ্য বা কম দেশপ্রেমী যারা তারা এ জায়গাটা নিয়ে নেবে।
শনিবার বিকেলে সোনারগাঁয়ের রয়েল রির্সোটে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সোনারগাঁ শাখার উদ্যোগে আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ শীর্ষক ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, খুনি হাসিনা আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ যে নামেই হোক না কেন যাদেরকে মাঠ পর্যায়ে ব্যবহার করেছে তাদেরকে শুধু মাত্র টিস্যু পেপারের মতো ব্যবহার করেছে বিপদের সময় তাদের ফেলে পালিয়ে গেছে। তাদের এবার শিক্ষা নেয়ার আছে আপনি কোন নেতার পেছনে দাড়াবেন কাদের হয়ে কাজ করবেন কাদের পেছনে ছুটবেন। দেশের বাইরে থেকে আপনাদের উস্কানি দেবে তাতে যদি আপনারা মাঠে নামেন তাহলে আপনারাই ভুক্তভুগী হবেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে খবর আছে আমাদের সাথে অনেক রাজনৈতক দল আন্দোলনে ছিল তারা এখন টাকা ও ক্ষমতার আশায় প্রশয় দিচ্ছে। আমাদের কাছে অভিযোগ আছে বিভিন্ন থানার পুলিশ ও আদালতের বিচারক বিভিন্ন সুবিধার বিনিময়ে খুনিদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।
আপনাদের আমাদের লড়াইয়ে খুনি হাসিনা লেজ গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো খুনি হাসিনার কাছ থেকে আমাদের অসংখ্য শিক্ষা নেয়ার আছে।
আমাদের লড়াইটা হবে দীর্ঘ এ লড়াইয়ে সবার আগে থাকবে দেশের স্বার্থ মানুষের স্বার্থ । ফলাফল পেতে আমাদের হয়তো আরো ১০ বছর লাগবে। যারা লক্ষ্য নিয়ে লেগে থাকবেন তারা একদিন অবশ্যই সফল হবেন।
তিনি নির্বাচন বিষয়ে বলেন, ছাত্ররা ক্ষমতা লোভী নয়। যদি তাই হতো তাহলে ৫ আগষ্ট তারা ক্ষমতা নিতে পারতো বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের এর বিরুদ্ধে গিয়ে কথা বলার স্পর্ধা ছিল না।
এখন নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। আমরা এখন ক্ষমতা দেখছি না, জনতাকে দেখছি। আমরাও নির্বাচন চাই তবে নির্বাচনকে যে কোন শক্তি যেকোন গোষ্ঠী প্রভাবিত কিংবা অপব্যবহার করার চেষ্টা করলে বাংলাদেশের একটি সেন্টারেরও যদি এ ধরনের চেষ্টা করা হয় তাহলে সেই সেন্টারই হবে আমাদের পাল্টা আরেকটি অভ্যুত্থানের ক্ষেত্র।
আগামী জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের অর্ধশত বছরের ইতিহাসে সেরা নির্বাচন হতে হবে। এতে যেই দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন কোন আপত্তি নেই। কোন দল যদি ৩০০ আসনও পায় আমাদের এতে কোন আপত্তি নেই।
তিনি বলেন, মিডিয়া থেকে শুরু করে অনেক মহল আমাদের বিভিন্ন পদের বিপরীতে বিভিন্ন জনকে বসিয়ে প্রচার করছে যাতে আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। মত পার্থক্য হয়। কিন্তু কখনো আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবেনা।
অনুষ্ঠানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবারে সদস্যরা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নির্বাহী সদস্য তুহিন মাহমুদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সোনারগাঁ শাখার সংগঠক শাকিল সাইফুল্লাহ প্রমূখ।