মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ঠাকুরগাঁও জেলায় ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির সাথে হালকা বাতাসে আমন ধান শূয়ে পড়েছে মাটিতে। এছাড়াও ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাকসবজি। প্রাকৃতিক এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
আজ ২৫ অক্টোবর শুক্রবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর, জামালপুর ও রায়পুর ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে অনেক খেতে পাকা ও আধাপাকা ধান মাটিতে শূয়ে পড়েছে। এছাড়া শীতকালীন আগাম সবজির খেতও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলার ৫টি উপজেলায় চলতি বছর আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বিভিন্ন আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে। ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলু সহ শাক-সবজি চাষ হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সদর পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক হামিদুর রহমান বলেন, বৃষ্টির কারণে ধান মাটিতে শূয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিচু জমির ধান শূয়ে পড়েছে। সেখানে বিঘায় ৩০ মণ করে ফলন হতো, এখন ১০ মনও হয় কিনা সন্দেহ। তবে উঁচু জমির ধান ফসল এখন পর্যন্ত ভালো রয়েছে। আশা করি বৃষ্টি বন্ধ হলে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। একই গ্রামের আরেক কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, অসময়ে ঝড়-বৃষ্টি কৃষকদের জন্য বড় ক্ষতি। আলু সহ শাক-সবজির গাছ পচে যেতে পারে। মূলার খেতে পানি লেগে গেছে। বাজারে শাক-সবজির দাম বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কৃষক তাইজদ্দীন বলেন, কিছু আগাম আলু মাটিতে বপন করেছি। আরও বপন করার প্রস্তুতি নিয়েছি। হঠাৎ বৃষ্টির কারণে বপন করা আলু নিয়ে চিন্তায় আছি। সেই সাথে বৃষ্টিতে তৈরি করা মাটি রসাল হওয়ার কারণে আলু লাগানো কয়েকদিন পিছিয়ে গেলাম। এমনিতেই এবার গতবারে চেয়ে আলু বীজের দাম কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেশি। এজন্য আলু আবাদ করা বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে নিচু জমির ধানের কিছু ক্ষতি হয়েছে। যার পরিমাণ খুব বেশি নয়। এ কারণে ধান উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়বে না। আর বৃষ্টি বা ঝড়ো হওয়া না হলে তেমন ক্ষতি ঠাকুরগাঁও জেলায় হবে না। কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি শূয়ে পড়া ধান যেন দ্রুত কেটে নেয়। সেই সাথে শাক-সবজির জমে থাকা পানি দ্রুত সময়ে বের করার ব্যবস্থা নেয়।