

বীরগঞ্জ, দিনাজপুরঃ
সন্দেহ ভাজন শিশু ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় লংকা কান্ড। পরবর্তীতে সম্ভাব্য মরিচা ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীদ্বয়ের উপস্থিতিতে সন্দেহ ভাজন ধর্ষক দুলালকে জুতার মালা গলায় পরিয়ে বিক্ষুব্দ জনতা সোপর্দ করার পরেও পুলিশের উপর হামলা এবং ভাংচুর করেছে তাদের সরকারী গাড়ী।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে গতকাল ২৪ এপ্রিল ২০২৫ বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা হতে সারাদিন বীরগঞ্জ উপজেলার মরিচা ইউনিয়ন মাস্টার মোড়ে এই ঘটনা চলে।
একজন ভ্যান চালকের কথামত সন্দেহ জনক ধর্ষক দুলালকে নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সারাদিন বিক্ষোভ করে স্থানীয় বিক্ষুব্দ জনতা।
প্রত্যক্ষ দর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল ৮ টার দিকে মাস্টার মোড় দারুল উলুম রব্বানীয়া নূরানী ও হাফিজিয়া মাদরাসায় পড়ুয়া ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী চলমান পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ঐ এলাকার শফিকুলের পু্ত্র দুলাল (৫৪) নিজের ভুট্টা ক্ষেতে এলে সেখানে শিশু ছাত্রীর সাক্ষাৎ হয়, তাকে থামিয়ে বাবা-মা সহ তার নাম গ্রাম জিজ্ঞেস করে।
তাদের কথোপকথনের দৃশ্যটি এক ভ্যান চালক মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষকদেরকে ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে, জানায় দুলাল সম্ভবত শিশু মেয়েটিকে ধর্ষনের জন্য টেনে হেচরে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ভুট্টা ক্ষেতে ঢুকাচ্ছিল অর্থাৎ যৌন নিপীড়ন করেছে।
শিক্ষক এবং মাদ্রাসা কমিটির লোকজন দুলালকে ডেকে এনে গালমন্দ করে সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে আপোষ মিমাংসা করার কথা বলে তাড়িয়ে দেন। কিন্তু দুলাল তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার আবু তাহের আইয়ুবকে অবগত করার জন্য মাস্টার মোড়ে তার দোকানে আসে। মেম্বার ও মাদ্রাসার লোকজন বিষয়টি নিয়ে কথা বলাবলির সময় সেখানে আব্দুল লতিফের ছেলে মোশারফ হোসেন রুবেলের নেতৃত্বে একদল যুবক এসে দুলালকে শিশু ধর্ষক হিসেবে আটক করে, কিলঘুষি মারপিট করতে থাকে।
ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কথিত সন্দেহ ভাজন ধর্ষক দুলালকে এক নজর দেখতে শত শত নারী পুরুষ সমবেত হয় এবং তারা বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ করতে থাকে।
পুলিশে খবর দিলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসতে থানা হতে সকাল সাড়ে ১০ টায় এসআই দেবাশিস তাৎক্ষণিক সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে হাজির হন। কিন্তু বিক্ষুব্দ জনগন পুলিশ ও মেম্বারের ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখে। একের পর এক, ৩ দফায় থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শিহাবের নেতৃত্বে বেশ কয়েক জন পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় দুলালকে জনতার রষানল থেকে উদ্ধার এবং গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নাই।জনগনের দাবী দুলালকে মাথা নেড়া করে জুতার মালা গলায় পরিয়ে সমগ্র এলাকা ঘুড়িয়ে পুলিশে দিতে হবে। পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে কোন ক্রমেই সান্তনা দিতে পারছিলো না। এক পর্যায় মরিচা ইউনিয়নের সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী আঃ কাদের মাষ্টার ও আহসান হাবীব শামীম এবং তাদের সহযোগী মোশারফ হোসেন রুবেল জনতার উদ্দেশ্য মাইকে কথা বলে দুলালকে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের গাড়ীতে তুলে দেয়।
দুলালকে নিয়ে পুলিশের একটি পিকআপ থানায় চলে যায়, কিন্তু অন্য আরও দুটি পিকআপ এবং ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সহ কিছু পুলিশকে আটক করে ধস্তাধস্তি শুরু করে বিক্ষুব্দ জনতা, ঢিল ছুড়ে এবং গাড়ী ভাংচুরের চেষ্টা করে ফলে অফিসার ইনচার্জের ব্যবহৃত গাড়ীটি দুমরে মুচরে বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে থানা সুত্রে জানা গেছে।
গতকালের ধর্ষন চেষ্টা অর্থাৎ যৌন নিপীড়িত এবং পুলিশের কাজে বাধাদান, হুমকি ধামকি গাড়ী ভাংচুরের ঘটনায় বীরগঞ্জ থানায় পৃথক ২টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে মর্মে নিশ্চিত করেছেন ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শিহাব উদ্দিন।